বগুড়াকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর না মানলেও। এটা যে উত্তরবঙ্গের প্রান কেন্দ্র তা আপনাকে মানতেই হবে। আজ আপনাদের বগুড়ার একটা ছেলে ও একটা মেয়ের গল্প শোনাবো।
বগুড়ার উপশহর এলাকার পাশাপাশি দুইটা বাসার ছেলে মেয়ে দুজনের গল্প। বাসা দুইটার একটা পাচ তলা অন্যটা চার তলা।
(১) পাচ তলায় বসবাস করে আমার গল্পের নায়িকা। নাম বিথী। মিষ্টি একটা মেয়ে। পড়াশোনা করে আর্ম বেটালিয়ান স্কুল এ্যান্ড কলেজের ১০শ্রেনীতে। পড়াশোনায় ভালো।ফোন ব্যবহার করতে দিত না তার বাবা মা। মেয়েটার অদ্ভুত ধরনের একটা হোবি আছে। ঠিক যেমন কেউ বাগান করে,কেউ ইনডোর গেম খেলে,কেউ ছবি আকে। তেমনি তার একটা হোবি আছে। তার হোবিটা হচ্ছে, বাড়ির ছাদে গিয়ে কাগজের তৈরি প্লেন উড়ানো। শান্ত একটা মেয়ে।। মেয়েটার মাঝে একটা কাব্যিক ভাব আছে।কথায় কথায় ছন্দ মিলাতে পারে। সে একদম একা। খুব কাছের বন্ধু-বান্ধুবী নেই। মনের সব আনন্দ,দুঃখ-বেদনা ডাইরীতে লিখে প্রকাশ করে
প্রত্যেকদিন বিকাল তিনটায় ছাদে যায়।পাইভেট থাকার কারনে... চারটার পূর্বেই সেখান থেকে চলে আসে। এর মাঝের সময়টুকুতে বিথী গুনগুন করে গান গায়।নিজে নিজে আনন্দ করে। ঐ নীল আকাশের সাথে কথা বলে। কাগজের তৈরী প্লেনের সাথে মনের অনেক কথা লিখে উড়িয়ে দেয়। বিথীর দিনগুলো অনেক আনন্দে কেটে যায়।
(২) আর চার তলায় বসবাস করে আমার গল্পের নায়ক। নাম অনুর্বর চৌধুরী। তবে বন্ধুরা সবাই তাকে অনু বলেই ডাকে। খুব চঞ্চল একটা ছেলে। পড়াশেনায় অনেক ভালো। সরকারি আজিজুল হক কলেজে ইন্টারমিডিয়েটের ফার্স্ট ইয়ারে পড়াশেনা করে। মিউজিক তার খুব পছন্দ। বিশেষ করে সে জাস্টিন বেইবার ও আতিফ আসলামের বড় ভক্ত। মাথার উপর সব সময় হেড ফোনটা দিয়েই রাখে।পাইভেট শেষ করে বিকাল চারটায় ছাদে গিয়ে গান শোনা অনেক দিনের অভ্যাস। অনু গান শোনে, বিকালের নীল আাকশের খেলা দেখে। এভাবে তার দিনগুলো কেটে যায়। গিটার হাতে নিয়ে মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সুর গুলো বের করে গাইতে থাকে। স্কুল লাইফ থেকে সবে কলেজে লাইফে পা দিয়েছে। তাই আনন্দের পরিমানটা একটু বেশি। এ বয়সটা একটা উড়ন্ত বয়স। সব কিছুতেই এই বয়সে আনন্দের ঝর্ণা ঝরে। সব কিছু মিলে অনুর দিনগুলো বেশ আনন্দে কেটে যাচ্ছে।
(৩) অনু এক বিকালে পাইভেট শেষ করে গান শুনতে ছাদে যায়।হাটছে আর গান শুনছে।দিনগুলো সত্যিই অনেক আনন্দে কেটে যাচ্ছে। হাটতে হাটতে একটা কাগজের তৈরি প্লেন তার পায়ের নিচে পরে। তার সাথে কিছু একটা লেখা। অনু দাড়িয়ে গেল।প্লেনটা হাতে তুললো। পায়ের নিচে পরাতে ময়লা ধরেছে। খুব আলতো করে প্লেনটার ময়লা মুছে ফেললো।তারপর ভেতরে কি লেখা তা মনযোগ দিয়ে পড়তে লাগলো। পড়া শেষে অনু এদিক ওদিক তাকিয়ে কি একটা খুজতে লাগলো।কিছুই দেখতে পেল না।। অনু আবার কাগজের দিকে তাকিয়ে থাকলো। কিছু একটা আবার পরলো। কাগজটাতে লেখা ছিল চার লাইনের ছোট্র কবিতা। বিথীর লেখা কবিতা। সেখানে লেখা::
"কি গো আমার রাজকুমার? কোথায় তুমি থাকো? কবে হবে আপন আমার? কবে আমি তোমার মনের রাজ্যে রানী হয়ে যাবো?"
এটা আমি লেখক আর আপনি পাঠক জানলেও গল্পের নায়ক অনুর জানা নেই। তবে সে এটা বুঝতে পারে যে, প্লেনটা ও লেখা কবিতাংশটুকু একজন বালিকার।
অনুর জানা নেই পাশের বাসাতে সুন্দরী একটা মেয়ে বাস করে।(শহরের জীবনযাত্রা যেমন হয় আর কি!) তাই অনু ভাবছে এটা কার লেখা। কথা থেকে আসলো। তবে কি ঐ বাসাতে কোন মেয়ে বাস করে। এরকম আরো অনেক অদ্ভূত সব ভাবনা অনুর মাথায় আসতে শুরু করে দিয়েছে।
কাগজের একটা প্লেন অনুর ঘুম কেরে নিয়েছিলো। অনু প্রত্যেকদিন ছাদে গিয়ে ঐ কাগজের তালাশ করতো।আরেকটা প্লেনের জন্য অপেক্ষা করতো। কি অদ্ভূত! একটা মাত্র কাগজের প্লেন একটা ছেলের রাতের ঘুম হারাম করে দিতে সক্ষম।।। কি করবে অনু ভেবে পাচ্ছিল না। অনু একদিন প্লান করলো।একটা বড় ঘূরির সাথে বিথীর লেখা কবিতাংশটুকু লিখে আকাশে উড়িয়ে দিয়ে বেধে রাখলো।যাতে কবিতাংশের মালিক বুঝতে পারে।তার জন্য কেউ একজন অপেক্ষা করে। কিন্তু অনুর দূর্ভাগ্যের কপাল। সেদিন রাতে বৃষ্টি হয়ে ঘুরিটা ছিরে পরে যায়।
আর এদিকে বিথী জানেই না, তার একটা মাত্র প্লেন ও চার লাইনের কবিতার জন্য একটা ছেলে জ্বালায় পুড়ে মরছে। এত কিছু করে বেড়াচ্ছে।।
অনু একই কাজ আরেক দিন করলো। সেদিন অনুর ভাগ্যটা তার সাথে সঙ্গী হলো। আকাশে ঘূরী উড়িয়ে দিয়ে রাখলো।
পরেরদিন বিকাল হলে, বিথী বাসার ছাদে যেতেই অবাক হয়ে যায়। কেউ একজন বিশাল ঘূরী উড়িয়ে রাখছে। তাতে বিথীর লেখা কবিতাংশ।
কে এই পাগলটা? বিথীর মনের কোনে ছোট্র এই প্রশ্নটা বাসা বাধে।
চারটা বাজার পূর্বেই বিথী চলে যায়। অনু এসে পায় না।।। আসবে ভেবে অনু বসে থাকে সারাটি বিকাল। কিন্তু কেউ আসেনা। ইদানীং অনুকে মনমরা অবস্থায় দেখা যায়। তাই পরপরের দিন আর পাইভেট পরতে যায় না।। মনমরা হয়ে ছাদে ঘূরির পাশে বসে ছিল। অনুর সুভাগ্যের দাড় খুলে যায়। সেদিন বিকালে বিথী এসে সেই ঘূরিটাকে দেখতে পায়। বিথী খুজতে গিয়ে একটা ছেলেকে দেখতে পায়। অনু ত্রি-কোটার পরে আছে বলে।ভ্রু কুচকায়। হঠাৎ অনু একটা মেয়েটাকে দেখে লাফিয়ে উঠে।
তারপর অনু ইশারায় বিথীকে হাত নারিয়ে হাই দেয়। কাগজের তৈরী প্লেনটা দেখিয়ে ইশারায়, অনু জানতে চায় এটা তার নাকি? বিথী মাথা নারিয়ে বলে।হ্যা।ওটা ওর।
এরপর বিথী ও অনুর মাঝে প্রায়ই কথা হত। বিথী কাগজের প্লেনে লিখে পাঠাতো। আর অনু ঘূরির সাথে আলপিন দিয়ে আটকিয়ে চিরকুট পাঠাতো।
বিথীকে গিটার বাজিয়ে গান শোনাতো। অনু প্রত্যেকদিন বিথীর সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করতো। তাদের মাঝে একসময় অনেক ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়।
সামনে বিথীর এসএসসি পরিক্ষা।পড়াশেনায় মনযোগ দিতে সমস্যা হয়। কথা বলা কমিয়ে দেয় বিথী।যদিও কথা বলার বিথীর মন উতলা করত। দুজনই দুজনার প্রেমে পড়ে যায়।কিন্তু তাদের মনের কথা মনেই থাকে।বলা হয়না।।
বিথীর পরিক্ষা শেষ হয়ে যায়। বিথীর বাবা সরকারি চাকরিজীবি।তার বাবার পোস্টিং গত দুমাস আগেই হয়েছে।তার বাবা ঢাকায় দুমাস আগেই চলে গিয়েছে।। বিথীর এসএসএসি পরিক্ষা থাকার জন্য বিথী ও তার মা এখানেই ছিল এতদিন। অথচ, অনু এসবের কিছুই জানে না।
কিন্তু এখন ত তাদের চলে যেতে হবে। চলে যাবার ডেটও হঠাৎ করে ঠিক হয়ে যায়। চলে যাবার পূ্র্বের দিন বিকালে বিথী সারাটি বিকাল অপেক্ষা করে। কিন্তু অনু আসে না।কেননা অনু ত সেদিন বন্ধুদের সাথে আউটিংয়ে চলে গিয়েছে।
বিথী অপেক্ষা করেছে..... অনুর ফোন নম্বর নেবার জন্য। কিন্তু অনু আসে না। তাই বিথী কোন উপায় না দেখে, কাগজের তৈরী প্লেনে লিখে যায়....
""আমি চলে যাচ্ছি অনু। ঢাকায় চলে যাচ্ছি। তোমার সাথে আর দেখা হবে না। তোমার নম্বর নেবার জন্য অপেক্ষা করেছি।কিন্তু তুমি আসনি। আমার ত ফোন নেই তাই আমি কিছুই করতে পারলাম না।""
অনু চিরকুটটাকে বুকে জোড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। তা কান্না কারো কানেই পৌছায় না।।।।
অনু প্রত্যেকদিন ছাদে যায়। কিন্তু আগের মত গান শোনে না। গিটার বাজায় না। শুধু চুপটি মেরে বসে চিরকুটের দিকে তাকিয়ে থাকে.......... আর তার চোখ দিয়ে হাহাকারের ঝর্না পড়তে থাকে.........
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর
এটা যদি গল্পই হয়ে থাকে তাহলে মধ্য সারিতে দিয়ে লিখতে হবে কেন? গল্পেরত লাইন বিন্যাস লাগে না, মাত্রা তাল ? এটা পাঠকের প্রশ্ন হতে পারে। আর আপনি লিখেছেন ‘পাইভেট’ একবার নয় বেশ ক’বার, বানান তো একটু দেখতে হবে ভাই। যাক গল্প কবিতায় স্বাগতম। লেখার হাত ভাল আছে, একটু পড়তে হবে ভাই, অন্যের পাতায় যান মতামত দিন-নিন তাতে আরো সমৃদ্ধ হবেন, আপনার জন্যে অনেক শুভকামনা আর আমার পাতায় আমন্ত্রণ।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।